ঢাকা ২১ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
এ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ হাজি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮ সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত এশিয়া কাপ আর্চারিতে সোনা জিতলেন বাংলাদেশের আলিফ পরমাণু ইস্যুতে ‘রেড লাইন’ স্পষ্ট করল ইরান সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ৬ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির ঘোষণা আসছে ২৫৩ জনের গুমের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে কমিশন প্রবাসীরা ফেরার সময় শুল্ক ছাড়াই আনতে পারবেন যে ১৯ পণ্য বাংলাদেশকে দুই প্রকল্পে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’

গাজীপুরে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে আহত ৩০

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ জানুয়ারি, ২০২২,  4:20 PM

news image

গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। শনিবার সকালে গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকায় লিজ অ্যাপারেলসের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, শ্রমিকরা শনিবার সকালে কাজে যোগদান করতে এসে কারখানার গেটে ৬২ জন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্তসহ লে-অফ ঘোষণার নোটিশ দেখতে পান। এ সময় কারখানার চারপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। পাওনা পরিশোধ ও পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কারখানা বন্ধের এই ঘোষণায় শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। পুলিশ অবরোধ ভাঙতে শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশের রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের মুখে শ্রমিকরা টিকতে না পেরে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং মহাসড়ক থেকে সরে গিয়ে বিভিন্ন শাখা রোডে ঢুকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা টঙ্গীর গাজীপুরা এলাকায় হুপলোম, তারগাছ এলাকায় মুনলাইট ও অনন্ত গার্মেন্ট কারখানায়ও ভাঙচুর চালায়। লিজ অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিক সালাহ উদ্দিন জানান, গত ২৬ জানুয়ারি কারখানার চার তলায় আইরন সেকশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনের সূত্রপাত হওয়া মাত্রই কারখানার সাইরেন বেজে উঠলে শ্রমিকরা দৌড়ে নিচে নেমে আসেন। এ সময় তারা দেখতে পান চারতলায় শ্রমিকরা আটকা পড়েছেন। সেসময় তারা সেখানে গিয়ে চার তলার শ্রমিকদেরকে নিরাপদে নিচে নামিয়ে আনেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া চারতলা থেকে শ্রমিকদের নামিয়ে আনায় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের সঙ্গে চরম খারাপ আচরণ করেন। এ ঘটনায় শ্রমিকরা প্রতিবাদ করায় সম্পূর্ণ অযৌক্তিভাবে ৬২ জন শ্রমিককে বরখাস্তসহ কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়। কারখানাটির অপর শ্রমিক বিল্লাল হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষ অহেতুক অজুহাতে পরিকল্পিতভাবে আগে থেকেই কারখানায় পুলিশের উপস্থিতি ঘটিয়ে লে-অফ ঘোষণা করেছে এবং বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের অন্তত ২৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তিন দিন আগের যে ঘটনার অজুহাতে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক দাবি করে তিনি। তিনি আরো বলেন, এর আগে এর চেয়ে বড় ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ কখনো কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেনি। এবার হয়তো কারখানা পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের অন্য কোনো ব্যর্থতার দায় শ্রমিকদের ওপর চাপানোর চেষ্টা চলছে। এদিকে কারখানা লে-অফ ঘোষণা ও ৬২ শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্তের কারণ হিসেবে লিজ কমপ্লেক্সের পরিচালক গাজী মোহাম্মদ জাবের জানান, গত ২৬ জানুয়ারি শ্রমিকরা কোনো কারণ ছাড়াই উৎপাদন বন্ধ রাখে। শ্রমিকদের কাজে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ায় ওই দিন কারখানার নির্বাহী পরিচালক  মোশারফ হোসেন ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা নান্নু মিয়াকে শ্রমিকরা মারধর করে এবং উশৃঙ্খল শ্রমিকরা কারখানার অফিস কক্ষসহ প্রতিটি ফ্লোরে ভাঙচুর চালায়। ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, সকল সিসি ক্যামেরা, কম্পিউটার, এনডিআর ও সার্ভারসহ অন্যান্য মূল্যবান ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীও ভাঙচুর করে। তিনি আরো বলেন, শ্রমিকরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ১২টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১৫ লাখ টাকা অফিস থেকে লুটে নেয়। এ ঘটনায় জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় ২৯ জানুয়ারি থেকে কারখানা বন্ধ ও ২৪(২) ধারা মতে অভিযুক্ত ৬২ জন শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্তসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, সংঘর্ষে আমাদের ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫৭ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৩ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কারখানাসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম