
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ ডিসেম্বর, ২০২২, 10:46 AM
এবারের গ্রন্থমেলায় পর্যাপ্ত বই ছাপানো নিয়ে শঙ্কা
মিল মালিকরা একজোট হয়ে কাগজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়েছেন। ফলে এবার মহান একুশে গ্রন্থমেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বই ছাপানো সম্ভব হবে না। এ কারণে বইয়ের দামও বাড়তে পারে। এ পরিস্থিতিতে শুল্ক্ক কমিয়ে দিয়ে কাগজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতারা। গতকাল সোমবার রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনে আয়োজিত গণশুনানিতে তাঁরা এসব কথা বলেন। সম্প্রতি কাগজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় স্বপ্রণোদিত হয়ে কমিশন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নেতাদের গণশুনানিতে উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ করে। সভা শেষে কমিশন জানায়, বাজারের তথ্য যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে তারা। শুনানি গ্রহণ করেন কমিশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী ও আইনবিষয়ক সদস্য নাসরিন বেগম প্রমুখ। সভায় বিভিন্ন প্রকাশনীর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম বলেন, এক বছরে কাগজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম এত বাড়েনি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে কাগজের দাম এখনও অনেক কম। কিন্তু বাংলাদেশে মিল মালিকরা একসঙ্গে দাম বাড়িয়েছেন। কাগজের এ বাড়তি দাম শুধু প্রকাশকদের চাপে ফেলেনি, এতে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সে সঙ্গে এটা জাতির মেধা বিকাশেও বড় অন্তরায়। কাগজের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, এখন সংকট থেকে উত্তরণ ও মিল মালিকদের দৌরাত্ম্য কমাতে হলে শুল্ক্ক কমিয়ে কাগজ আমদানির অনুমতি দিতে হবে। তাহলে বাজারে কাগজের দাম কমে আসবে।
আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, মিল মালিকদের সম্মিলিতভাবে দাম বাড়ানোর কারণে বিপদে পড়েছেন প্রকাশকরা। বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে কাগজ কিনতে হচ্ছে তাঁদের। ফলে এবারের বইমেলায় বই প্রকাশের সংখ্যা কমে যাবে। গত বছরের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশের মতো বই প্রকাশ হতে পারে। বইয়ের দামও বাড়তে পারে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মতো। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন,
এক বছর আগে যে নিউজপ্রিন্ট কাগজের টন ছিল ৪০ থেকে ৪২ হাজার। সেটার দাম এখন ১ লাখ টাকার বেশি। দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। তারপরও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সভায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) একজন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, 'সরকারের সঙ্গে মিল মালিকদের একটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে বারবার অনুরোধ করার পরও অস্থিরতা কমেনি কাগজের বাজারে।
বরং এমন হয়েছে, আমরা মিল মালিক ও প্রকাশকের মধ্যে সমন্বয় করে একটা দামে কাগজ দেওয়ার ব্যাপারে রাজি করিয়েছিলাম। পরে সেই দামে কাগজ দেয়নি মিল।' বিস্তারিত শুনে সভায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়গুলো আরও ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হবে। এ শিল্পে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে এবং বাজারের তথ্য যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে কমিশন। সূত্র : সমকাল