ঢাকা ২০ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
এ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ হাজি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮ সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত এশিয়া কাপ আর্চারিতে সোনা জিতলেন বাংলাদেশের আলিফ পরমাণু ইস্যুতে ‘রেড লাইন’ স্পষ্ট করল ইরান সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ৬ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির ঘোষণা আসছে ২৫৩ জনের গুমের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে কমিশন প্রবাসীরা ফেরার সময় শুল্ক ছাড়াই আনতে পারবেন যে ১৯ পণ্য বাংলাদেশকে দুই প্রকল্পে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’

উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, সেনা-মেরিন মিলিয়ে ২৭০০ সদস্য পাঠালেন ট্রাম্প

#

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১০ জুন, ২০২৫,  12:07 PM

news image

অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযানের জেরে বিক্ষোভে উত্তাল চতুর্থ দিন পার করেছে লস অ্যাঞ্জেলেস। ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এ শহরটিতে চলমান এ বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে ইতোমধ্যে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর দমননীতি আগুনে আরও ঘি ঢালছে; বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে নিউইয়র্ক সিটি, ফিলাডেলফিয়া এবং সান ফ্রান্সিসকোর মতো অঙ্গরাজ্যগুলোতেও। দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড দিয়েও পরিস্থিতি সামালাতে ব্যর্থ হয়ে এবার বিক্ষোভ দমনে লস অ্যাঞ্জেলসে আরও দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড ও ৭০০ মেরিন সেনা পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সোমবার (৯ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের বিস্তৃত এলাকায় ফেডারেল কর্মী ও ফেডারেল সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ে যেসব বাহিনী কাজ করছে মেরিন সেনারা তাদের সঙ্গে কাজ করবে। ওই এলাকায় নজরদারি অব্যাহত রাখতে পর্যাপ্ত সংখ্যক বাহিনী সরবরাহের জন্য তাদের মোতায়েন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, টাস্ক ফোর্স ৫১–এর মধ্যে ২ হাজার ১০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য এবং ৭০০ মেরিন সেনা রয়েছেন। তারা উত্তেজনা প্রশমন, জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং বলপ্রয়োগের নিয়ম সম্পর্কে প্রশিকক্ষণপ্রাপ্ত।

এদিকে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে বরাবরের মতোই নিন্দা জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম। লস অ্যাঞ্জেলেসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। গ্যাভিন নিউসম আরও বলেন, ‘মেরিন সেনারা আমাদের বীর। একজন একনায়কোচিত প্রেসিডেন্টের উন্মাদ বাস্তবতা বর্জিত ইচ্ছা পূরণের জন্য নিজের দেশের মাটিতে তাদের দেশবাসীর মুখোমুখি দাঁড় করানো উচিত নয়। এটা আমেরিকান আদর্শের পরিপন্থী।

গত ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসন উচ্ছেদ এবং নথিবিহীন অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন ট্রাম্প। তারপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অভিযান শুরু করে পুলিশ এবং মার্কিন কাস্টমস বিভাগের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা আইসিই। পুলিশ ও আইসিই’র যৌথ অভিযানে গত প্রায় ৬ মাসে হাজার হাজার নথিবিহীন অভিবাসীকে আটক করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া নথিবিহীন অভিবাসীদের সংখ্যা বেশি—এমন অঙ্গরাজ্যগুলোতে পৃথক বন্দিশালা বা ডিটেনশন সেন্টার করা হয়েছে। সেসব বন্দিশালায় আটক আছেন আরও হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী। এ ধারাবাহিকতায় গত ৬ জুন লস অ্যাঞ্জেলেসের শহরতলী এলাকা প্যারামাউন্টে নথিবিহীন অভিবাসীদের শনাক্ত ও আটক করতে অভিযানে নামেন পুলিশ ও আইসিই সদস্যরা। তবে অভিযানের শুরুতেই তারা ব্যাপক প্রতিরোধের সম্মুখীন হন। প্যারামাউন্টের বাসিন্দারা তীব্র বিক্ষোভের পাশাপাশি পুলিশ ও আইসিই সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল, বোতল ও মলোটভ ককটেল বা পেট্রোল বোমা ছুড়তে থাকেন।

অবস্থা বেগতিক দেখে পরের দিন পুলিশ ও আইসিই সদস্যদের সহায়তার জন্য মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন আধা সামরিক বাহিনী ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার সদস্যকে মোতায়েনের নির্দেশ দেন ট্রাম্প। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার পরিবর্তে সংঘাত আরও বাড়তে থাকে। এই অবস্থায় গতকাল সোমবার লস অ্যাঞ্জেলেসে আরও দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড এবং তাদের সঙ্গে ৭০০ মেরিন সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাম্প। আজ চার দিন ধরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে আছে লস অ্যাঞ্জেলেস। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার নিউইয়র্ক সিটি, ফিলাডেলফিয়া এবং সান ফ্রান্সিসকোতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম