
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৩১ মার্চ, ২০২২, 3:57 PM

ইমরানকে পদত্যাগ করতে বললেন সেনাপ্রধান, অস্বীকার পিটিআইর
পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে আরও পিছিয়ে পড়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শেষ খবর পর্যন্ত ১৯৯-১৪২ ভোটে পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। গণমাধ্যমের দাবি, তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন দেশটির সেনাপ্রধান যদিও তা প্রত্যাখ্যান করেছে পিটিআই। এদিকে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ৩ এপ্রিল পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। তবে দিন যত ঘনিয়ে আসছে তত ক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে ইমরানের জন্য।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) জিও নিউজের তথ্য অনুযায়ী, পিটিআইর একের পর এক এমপি বিরোধীদের সমর্থন দেওয়ায় ইমরানের দলের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে বিরোধীরা। বর্তমানে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতি সমর্থন রয়েছে ১৪২ এমপির আর বিরোধীদের ১৯৯ প্রকাশ্যে ইমরানের ওপর থেকে এমপিদের সমর্থন প্রত্যাহারের কারণে গুঞ্জন উঠেছে পার্লামেন্টে ভোটের আগেই পদত্যাগ করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। তা আরও জোরালো হয়েছে পাক সেনাপ্রধান ও আইএসআই প্রধানের সঙ্গে দু’দফায় সাক্ষাৎ করায়। খবর বেরিয়েছে ইমরানকে পদত্যাগ করতে বলেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজও য়ার। তবে এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পিটিআই। এদিকে ইমরান খান বার বার দাবি করে আসছেন তার সরকারকে হটাতে বিদেশি চক্রান্ত চলছে। গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের একটি চিঠিও দেখিয়েছেন তিনি। এ ষড়যন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্রের হাত থাকার বিষয়ে জোর গুঞ্জন চলছে। তবে, এমন অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে বাইডেন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অনাস্থা প্রস্তাবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা এবং প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ‘হুমকি দিয়ে চিঠি লেখার’ বিষয়টি ভিত্তিহীন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। পাকিস্তানে আইনের শাসনকে সমর্থন করে তারা। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, পাকিস্তানের সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে সম্মান জানায় তারা। অব্যবস্থাপনা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগ তুলে গত সোমবার পার্লামেন্টে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী নেতারা। আজ বৃহস্পতিবার পুনরায় শুরু হতে যাওয়া অধিবেশনে ওই প্রস্তাবের ওপর বিতর্ক হওয়ার কথা রয়েছে। ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ১৭২টি ভোটের প্রয়োজন। যা এরইমধ্যে নিশ্চিত করে ফেলেছেন বিরোধীরা।পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৪২টি। ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ১৭২টি ভোটের প্রয়োজন হবে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জিও নিউজের হিসাব অনুযায়ী, বিরোধী জোটের হাতে রয়েছে ১৯৯ ভোট। অন্যদিকে, ইমরান সরকারের রয়েছে ১৪২ ভোট। পার্লামেন্টে আনা বিরোধীদের অনাস্থা ভোটে পাকিস্তানে এই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী বিদায় নিতে যাচ্ছেন। সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের কারণে পাকিস্তানে এর আগেও কোনো প্রধানমন্ত্রীই তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি।